সারাদেশে বৃষ্টির মত ক্রসফায়ার চলছে
লিখেছেন লিখেছেন শাফিউর রহমান ফারাবী ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৯:২০:৫২ রাত
সারাদেশে বৃষ্টির মত ক্রসফায়ার চলছে। একটা পোকামাকড়ের যে দাম আওয়ামী লীগের কাছে মানুষের এই দামও নেই। প্রতিদিন ৪/৫ জন করে মানুষ আওয়ামী লীগের এই ক্রসফায়ারের বলি হচ্ছে। এখন আবার এক নতুন তত্ত্বের আমদানী হয়েছে। সেটা হল বোমা মারতে যেয়ে ট্রাকের নীচে চাপা পরে সে নিহত হয়েছে। যেহেতু খুব বেশী ক্রসফায়ারের খবর মিডিয়াতে আসলে সরকার চাপে পরবে তাই পুলিশ বাহিনী মানুষ মারার মিথ্যা কাহিনী ট্রাক চাপার কথা বলা শুরু করছে। অবাক লাগে প্রতিদিন এত গুলি ছাত্রনেতা ক্রসফায়ারে মারা যাচ্ছে কিন্তু দেশের কারো কোন বিকার নেই। টকশো মিডিয়াতেও এই তরুন ছাত্রনেতাদের হত্যার প্রতিবাদ করে কিছু বলা হচ্ছে না। যেন আওয়ামী লীগ মানুষ মারবে আর আমরা চেয়ে চেয়ে দেখব এটাই এখন আমাদের সবার নিয়তি হয়ে দাড়িয়েছে। একটা বুদ্ধিজীবিও এই তরুন ছাত্রনেতাদের ক্রসফায়ারে নেওয়ার প্রতিবাদ করছে না। এই ক্রসফায়ারে যারা মারা যাচ্ছে এরা সব ছাত্রদল ও শিবির করে। অর্থ্যাত্ জাতীয় রাজনীতি যাদের উপর ভর দিয়ে দাড়িয়ে আছে তারাই আজ তরুন বয়সে এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিচ্ছে। বর্তমান অবরোধের চালিকা শক্তি হল এই ছাত্রদল ও শিবির। তাই স্বাভাবিক ভাবেই আওয়ামী লীগ তার এই ২ চোখের কাটাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে ইচ্ছুক। আগে ক্রসফায়ার হত পেশাদার সন্ত্রাসীদের যাদের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতীষ্ঠ থাকত। সক্রিয় রাজনীতি যারা করত তারা কখনোই ক্রসফায়ারের স্বীকার হত না। আর এখন পেশাদার সন্ত্রাসীদের কে সরকার ভারত পাড়ি দিতে সাহায্য করে আর কমিটিতে থাকা ছাত্রদল শিবিরের নেতাদের কে ধরে ধরে ক্রসফায়ারে দিচ্ছে।
RAB কে কিন্তু BNP ই সৃষ্টি করেছে। BNP এর সময়ে RAB এত জনপ্রিয় ছিল যে তরুনীরা RAB এর কাছে যেয়ে ইভটিজিং, ফোনে বিরক্ত করা, পাড়ার বখাটের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য RAB কে দিয়ে আসত। আর আওয়ামী লীগ RAB কে একটা দলীয় বাহিনীতে পরিনত করেছে। ভাবতে অবাক লাগে এই RAB কি সেই RAB ! জনগনের দৃষ্টিতে RAB আর ছাত্রলীগের মাঝে আর কোন পার্থক্য নেই। ছাত্রলীগ যেমন খুঁজে খুঁজে ছাত্রদলের ছেলেদের কে ধরে ধরে পিটায় ঠিক তেমনি RAB ও বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করে ছাত্রদলের ছেলেদের কে পরপারে পাঠিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু RAB কে সৃষ্টি করাই হয়েছিল FBI এর মত একটা আধুনিক বাহিনীর আদলে। কিন্তু সরকার এখন RAB কে রক্ষী বাহিনীর মত একটা কিলিং বাহিনীতে পরিনত করছে। ৭৪ সালে রক্ষী বাহিনীর হাতে কিছু পয়সা ধরিয়ে দিলেই তারা আপনার শত্রুকে হত্যা করে ফেলত। জমি জমা নিয়ে আপনার কারো সাথে বিরোধ আছে তো সোজা চলে যান Rab এর কাছে। RAB ই আপনার শ্ত্রুকে হত্যা করে ফেলবে। আপনাকে কিচ্ছু করতে হবে না। টাকার জন্য RAB বর্তমানে পাগল হয়ে গেছে।
লোক মারফত খবর পেলাম ঢাকার মিন্টু রোডের ডিবি অফিসে ১০০ জনের মত আটক আছে। সরকার থেকে নির্দেশ পেলেই এক একজন করে তাদেরকে ক্রসফায়ারে দিয়ে দেওয়া হবে। ভাবতেই অবাক লাগে আমি এই মিন্টু রোডের ডিবি অফিসে ১০ দিন ছিলাম। এই ১০ দিনের মাঝে ৭ দিনই ছিল আমার রিমান্ড দিবস। যারা আমাকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল, আমার হাত পায়ে হাতুড়ি দিয়া মারছিল তারাই এখন ঢাকা শহরে জল্লাদের ভূমিকায় অবতীর্ন হয়েছে। হ্যা ঢাকা শহরের ভিতরে সবচেয়ে বেশী ক্রসফায়ার করছে এই ডিবিরাই। ডিবির কৃষ্ণপদ রায় তো সাক্ষাৎ যমদূতের ভূমিকায় অবতীর্ন হয়েছে। ছাত্রদলের জনিকে তো এই কৃষ্ণপদ রায়ই হত্যা করল। আজকে প্রথম আলো পত্রিকায় পড়লাম বিএনপির সাবেক মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের আপন ভাগ্নে নাহিদকেও ক্রসফায়ারে নিয়ে মারা হয়েছে। মিরপুরের সিভিল পুলিশ টীম নাহিদের পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করেছিল। কিন্তু নাহিদের পরিবার তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় নাহিদের শরীরে ১৭ টা গুলি পরল। হ্যা বর্তমানে পুলিশ আপনাকে ক্রসফায়ারে দেবার আগে আপনার উপর প্রচুর নির্যাতন করবে। যাদেরকেই ক্রসফায়ারে নেওয়া হয়েছে তাদের শরীরে অনেক গুলি গুলির দাগ, তাদের মাংস খুবলে নেওয়া, কানের পাশে গুলি করা, সারা শরীরে অনেক মাইরের দাগ দেখা যাচ্ছে। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী যেরকম বেয়নেট দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে মানুষ মারত ঠিক তেমনি বর্তমান পুলিশ বাহিনীও ক্রসফায়ারে নেওয়ার আগে মানুষের উপর একটা পাশবিক নির্যাতন চালায়।
আপনি কি প্রতিবাদ করবেন। প্রতিবাদ করলেই আপনাকে রাজাকার যুদ্ধপরাধী নামে অভিহিত করা হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে হল আওয়ামী লীগ দলটা সারাজীবন ক্ষমতায় থাকা। যে কেউ আওয়ামী লীগের এই অবৈধ ভাবে ক্ষমতায় থাকার প্রতিবাদ করবে সাথে সাথে সে গনজাগরন মঞ্চ আর মুক্তমনাদের চোখে আলবদর নামে অভিহিত হয়ে যাবে। এই যে দেশে এত গুলা নিরীহ ছাত্রনেতাকে হত্যা করা হচ্ছে মুক্তমনারা কিন্তু এখন একদম চুপ। কিন্তু অনলাইনে এই মুক্তমনারা সব সময় নিজেকে মানবাতাবাদী নামে পরিচয় দেয়। সুদূর ইরাক আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত এলাকার জন্য মুক্তমনাদের মন সব সময় কাঁদলেও বাংলাদেশের young young ছেলেদের মৃত্যু নিয়ে মুক্তমনাদের মনে কোন আক্ষেপ নাই। তাদের কথা হল সাপের বাচ্চা তো সাপই হয়। তাই ছোট থাকতেই সব জামাত শিবির ছাত্রদল কে মেরে ফেল। ভাবতেই অবাক লাগে আমরা বাংলাদেশ কে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলি কিন্তু নিজামী মুজাহিদ রাজাকার ছিল তাই যারা এখন জামাত শিবির করে তাদের কে হত্যা করলে কোন অপরাধ নেই এই ধরনের মন মানসিকতা পছন্দ করি। নিজামী মুজাহিদ যদি কোন অপরাধ করে থাকে তাইলে তাদের বিচার হবে কিন্তু তাদের অপরাধের কারনে তো আপনি বর্তমান জামাত শিবিরকে দোষ দিতে পারেন না। একটা দেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সবারই রাজনীতি করার অধিকার আছে। আর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ কে যদি কখনো বার্মা বা ভারত আক্রমন করে তাইলে এই জামাত শিবির ছাত্রদলই তো প্রথম প্রতিবাদ করবে। তারেক জিয়া ছিল সবচেয়ে বেশী ভারতবিরোধী তাই এই তারেক জিয়াকে দেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। রক্ত রক্ত আমি তৃষ্ণার্ত এটাই হচ্ছে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্লোগান। আল্লাহ সুবহানাতায়ালা আমাদের কে এই রক্তখেকো ডাইনী প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে নিস্তার দিক আমরা সেই দোয়াই করি।
পেট্রোল বোমা কিন্তু জামাত শিবির বা ছাত্রদলের নেতারা মারছে না। এগুলি ছাত্রলীগ করছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে বহু ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে পেট্রোল বোমা সহ। উত্তরবঙ্গের উচিত দেশ থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া। কারন উত্তরবঙ্গের উপরেই হাসিনা বেশী নির্যাতন করছে। বিএনপির উপরে বিদেশীদের কোন support নেই। খালেদা জিয়া যে এখন গৃহবন্দী হয়ে আছে একটা বিদেশী কূটনৈতিকও যায় নি খালেদা জিয়াকে দেখতে যেতে। উল্টো আওয়ামী লীগ বিএনপিকে বিদেশে আই এস আই এস বলে পরিচয় করে দিচ্ছে। আমরা পাকিস্তানের সমালোচনা করি বলি পাকিস্তান একটা ব্যর্থ রাষ্ট্র কিন্তু পাকিস্তানে ঠিকই জারদারী নওয়াজ নির্বাচন করে ক্ষমতায় এসে পরে। ওইখানে নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কোন হইচই হয় না। সব ক্যাচাল খালি এই বাংলায়। এইভাবে ক্রসফায়ার চলতে থাকলে তো আমি আপনি আমরা সবাই ক্রসফায়ারে চলে যাব। কারন তখন আমাদের সাথে যাদের শত্রুতা আছে তারা পুলিশকে অল্প কিছু টাকা দিয়ে আমাদের কে পরপারে পাঠিয়ে দিবে।
বিষয়: রাজনীতি
১৮৯০ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন