তাবলীগ জামাত সকলের পরিচিত এবং কথাকথিত বড় দল হচ্ছে ইলিয়াস মেওয়াতির স্বপ্নে পাওয়া তাবলীগ।

লিখেছেন লিখেছেন ইসলাম কখনো মাথা নত করেনা ০৮ জানুয়ারি, ২০১৭, ০২:৪১:৫৯ দুপুর

তাবলীগ জামাত সকলের পরিচিত এবং তথাকথিত বড়

দল হচ্ছে ইলিয়াস মেওয়াতির স্বপ্নে পাওয়া

তাবলীগ। এ দলের লোকেরা সাধারণ

মানুষদের বিভিন্ন মনোমুগ্ধকর কথামালায়

আবদ্ধ করে নিজেদের দল ভারী

করার চেস্টা করে। এবং সাধারণ মানুষও

এদের কথা শুনে এবং ফায়দা ফযিলতের কথা

শুনে আকৃষ্ট হয়। কিন্তু বেশিরভাগ সাধারণ

মানুষ এই জামাতের আক্বীদা

সম্পর্কে অবগত নয়। সাধারন লোকজন এদের

আক্বীদা সম্পর্কে না জেনে শুধু এদের

দাওয়াতী কাজে যোগ দিয়ে নবীওয়ালা কাম

করছে বলে গর্ববোধ করে।

কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই

স্বপ্নেপ্রাপ্ত তাবলিগ হচ্ছে হাদীস শরীফে

বর্নিত একটি ফির্কা।

@ আসুন আমরা উক্ত ফির্কা সম্পর্কে

বর্নিত আলামত সমৃদ্ধ হাদীস শরীফ খানাদেখি-

" সাহাবী আবু সাঈদ খুদরী ও হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা উনারা বলেন যে, হুজুরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার বিদায়ের পর পূর্ব দেশগুলির মধ্য হতে কোন একটি দেশ হতে আমার উম্মতের ভিতর হতে একটি দল বের হবে। এইদলের সদস্যগন হবে অশিক্ষিত এবং মূর্খ।এদের মধ্যে কোন শিক্ষিত লোক গেলে সেওহয়ে যাবে মূর্খেরমত।তাদের বক্তৃতা হবে বহুগুনেরও ফযিলতের। তাদের মত বক্তৃতা বা বয়ান আর কারো হবে না।তাদের সকল আমল গুলো হবে নিখুত ওসুন্দর. তাদের নামাজের তুলনায় তোমাদের নামাজকে তুচ্ছ মনে

করবে,তাদের রোজা দেখে তোমরা

তোমাদের রোজাকে তুচ্ছ ও নগন্য মনে করবে।

তাদের আমল দেখে তোমাদের আমলকে হেয়

মনে করবে। তারা কুরআন শরীফ পড়বে কিন্তু তা তাদের গলার নিচে যাবে না। তারা কুরআনের উপর আমল বা কুরআন প্রতিষ্ঠার

কোন চেষ্টাও করবে না। এদের আমল

তোমাদের যতই আকৃষ্ট করুক না কেন,কখনোই

এদের দলে যাবে না।

কারন প্রকৃতপক্ষে এরা ইসলাম থেকে

দ্বীন হতে বহির্ভূত । তীর যেমন ধনুক

হতে বের হয়ে যায়,সে আর কখনো ধনুকের

নিকট ফিরে আসে না।

তেমনি এরা দ্বীন থেকে বেরিয়ে যাবে,আর

কখনো দ্বীনের পথে ,কুরআন সুন্নাহর পথে ফিরে আসবে না।""

দলীলঃ

√ ফতহুল বারী ১২ তম খন্ড ৩৫০ পৃষ্ঠা ।

√ মিরকাত শরীফ ৭ম খন্ড ১০৭ পৃষ্ঠা ।

এবং মজার বিষয় উল্লেখ্য হাদীস শরীফ

খানা বাংলাদেশের দেওবন্দী দের অন্যতম

শায়খুল হাদীস মৃত আজিজুল হক তার মাসিক

পত্রিকা " রহমানী পয়গাম" এপ্রিল/২০০৩

সংখ্যার ১২৪৭

নং জিজ্ঞাসা-জবাবে সহীহ বলে উল্লেখ

করছে।

এখন জানার বিষয় হচ্ছে উল্লিখিত হাদীসশরীফে বর্নিত আলামত বা লক্ষন সমূহএই দলের মধ্যে আছে কিনা?

এর জবাবে বলতে হয়ঃ-

উল্লিখিত হাদীস শরীফে ফির্কার যতগুলা লক্ষন বর্নিত আছে তার সবগুলাই এই

জামাতের মধ্যে বিরাজমান।

আমরাবিশ্লেষণ করে দেখি-

ক)প্রথমত বলা হয়েছে, " পূর্ব দেশ গুলির মধ্য

হতে কোন একটি দেশ থেকে আমার উম্মতের

ভিতর থেকে একটি দল বের হবে। "

→ দেখুন, প্রচলিত এই

স্বপ্নেপ্রাপ্ত তাবলিগ এর উৎপত্তি পূর্ব দেশ

থেকে । অর্থাৎ ১৩৪৫ হিজরী সনে পূর্ব দেশ

ভারতের মৌলবী ইলিয়াস মেওয়াতী 'তাবলীগ নামক এই ছয় উছুলী তাবলিগ প্রবর্তন

করে। বর্তমানেও ভারতের নিজামুদ্দিন

বস্তিতে তাদের মূল মারকায বা ঘাটি

রয়েছে । সূতরাং দিবালোকের মত প্রমান

হলো যে, প্রচলিত দলটি পূর্ব দেশ

থেকেই বের হয়েছে ।

দ্বিতীয়ত বলা হয়েছে, " এই দলের সদস্য গন

হবে অশিক্ষিত ও মূর্খ। এদের মধ্যে কোন

শিক্ষিত লোক গেলে সেও হয়ে যাবে মূর্খের

মত।"

→ দেখুন, এ কথা সর্বজন স্বীকৃত যে, এই

প্রচলিত তাবলিগ

অধিকাংশ সদস্যই হচ্ছে মূর্খ। এদের

প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস মেওয়াতী তার

মলফুজাতে মূর্খ শ্রেণীর লোক দ্বারা দল

ভারী করার কথা বলে গিয়েছে। আর মজার

ব্যাপার এদের দলে কোন শিক্ষিত লোক

গেলে সেও ধীরে ধীরে মূর্খে পরিনত হয়।

এরা ফাজায়েলে আমল ব্যতীত অন্য কোন

কিতাব দেখতেও চায় না,পড়তেও চায় না।

এবং ছয় উছুলের বাইরে অন্যকিছু তারা

আলোচনাও করে না। তাই কোন শিক্ষিত

লোক সেখানে গেলে পূর্ন ইলিম চর্চার

অভাবে মূর্খে পরিনত হয়। আর সবচেয়ে মজার

বিষয় হল এরা

আলিমদের চাইতে মূর্খদের বেশি প্রাধান্য

দিয়ে থাকে।

যা তাদের মুরুব্বী দের বক্তব্য

দ্বারা প্রমানিত।

যেমন- তাবলীগিদের বিশিষ্ট

মুরুব্বী ইসমাঈল হোসেন

দেওবন্দী তার কিতাবে লিখেছে--

"অনেক স্থলে নবীগন পর্যন্ত

হিদায়েতে বিরাট সংকটে ও

বিপদে পড়িয়াছিলেন,তাই

অনেক স্থানে বিরাট আলেমও ফেল

পড়িতেছে। কিন্তু মূর্খগন তথায় দ্বীন জয়

করিতেছে।"

দলীল-

√তাবলীগ গোটা উম্মতের গুরু

দায়িত্ব ১১৬ পৃষ্ঠা ।

সবাই একটু লক্ষ্য করুন তাবলীগ

মৌলবী নিজেই স্বীকার করলো তাবলীগি

দের অধিকাংশ মূর্খ। কারন তার কিতাবে

মূর্খগন

দ্বারা তাবলীগিদের বুঝিয়েছে।

শুধু তাই নয়, তাবলীগি দের

কিতাবে আরো আছে--

" মূর্খ লোক আমীর হওয়ার জন্য তিন চিল্লা

যথেষ্ট । আর আলেম

দের জন্য প্রয়োজন সাত চিল্লা।"

দলীল-

√ তের দফা ৭ পৃষ্ঠা ।

তারা আরো বলে থাকে-

"দ্বীন প্রচার শুধু আলেম দের

মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে দ্বীন ধ্বংস

হয়ে যেত এবং যাবে। অর্থাৎ জাহেল লোক

তাবলিগ করার কারনে দ্বীন টিকে ছিলো

এবং ভবিষ্যতেও টিকে থাকবে। "

দলীল-

√ তাবলীগ জামাতের সমালোচনা ও উহার

সদুত্তর ৯৫ পৃষ্ঠা ।

মূল : শা : আ: জাকারিয়া। অনুবাদ- মুহিববুর

রহমান আহমদ।

এবার আপনারাই বিচার করুন

হাদীস শরীফে বর্নিত দ্বিতীয় লক্ষল

মিলে গেলো কিনা??

তৃতীয়ত বলা হয়েছে, " তাদের বক্তৃতা হবে

বহুগুনের ফযীলতের। তাদের মত বক্তৃতা বা

বয়ান কারো হবে না।"

→ এ কথা সারা দুনিয়াবাসীর জানা যে,

প্রচলিত এই জামায়াত

তাদের বয়ানে শুধু ফজিলতের কথাই বলে।

তাদের প্রতিটা সদস্যদের একটাই বুলি- "

দ্বীনের রাস্তায় সময় লাগান, বহু ফায়দা হবে,

তিন চিল্লা মারেন বহু ফায়দা হবে, গাস্ত

করেন বহু ফায়দা হবে!!!""

এই বহু ফায়াদা হবে এটা তাবলীগিদের একটা

কমন ডায়ালগ। সেটাই কিন্তু হাদীস শরীফে

বলা হয়েছে- তাদের বক্তৃতা হবে বহুগুনের

ফযীলতের বা ফায়দার।"

যেমন কি রকম ফযীলতের কথা এরা বলে। কিছু

সময় গাশতে বের হওয়া শবে বরাত ও শবে

কদরের রাতে হাজরে আসওয়াদকে সামনে

নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার চাইতেও উত্তম।"

এবার চিন্তা করুন, হাদীস শরীফে বর্নিত

লক্ষম এদের মধ্যে পাওয়া যায় কিনা।

আর এ সকল কথার সত্যতা তাদের মুরুব্বী দের

কিতাবেই পাওয়া যায়।

তাবলীগ জামায়াত এর প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস

মেওয়াতি তার মালফুযাতে লিখেছে-

" ফাযায়েলের মর্যাদা মাসায়েলের চাইতে

বেশি।"

দলীল-

√ মলফুযাত ১২৮ পৃষ্ঠা ২০১ নং মালফুজ।

√ তাবলীগ গোটা উম্মতের গুরু দায়িত্ব ১০১

পৃষ্ঠা ।

তাদের অন্যতম মুরুব্বী মাওলানা নোমান

আহমদ লিখেছে-

" সারা বছর প্রতি মাসে তিন দিন করে

লাগালে পুরা বছর আল্লাহর রাস্তায়

কাটানো হয়েছে বলে গন্য হবে। কারন প্রতি

নেক কাজে দশগুন সাওয়াব হিসেবে

একদিনের কাজে ত্রিশ দিনের সাওয়াব

পাওয়া যাবে।"

দলীল-

√ হযরতজীর কয়েকটি স্মরনীয় বয়ান ১৩ পৃষ্ঠা ।

তারা ফায়দার কথা বলতে গিয়ে আরো বলে-

" প্রচলিত তাবলীগ হচ্ছে নূহ আলাইহিস

সালাম উনার কিস্তির ন্যায়। তাতে যার

উঠলো তারা নাজাত পেয়ে গেলো।"

দলীল-

√ তাবলীগ কা মুকিম কাম ৩৯ পৃষ্ঠা ।

সূতরাং উপরোক্ত বিষয় গুলা থেকে এটাও

প্রমান হলো, তারা ফযীলতের কথা বেশি

বলে ।

শুধু তাই নয়, এরা ফযীলত নিয়ে একের পর এক

কিতাবও লিখে, যেমন- ফাযায়েলে আমল,

ফাযায়েলে ছদাকাত, ফাযায়েলে তাবলীগ

ইত্যাদি আরো অনেক।

সূতরাং হাদীস শরীফে বর্নিত তৃতীয় লক্ষনও

এদের মধ্যে পূর্নমাত্রায় বিরাজমান এটা

প্রমান হলো।

চতুর্থত যেটা বলা হয়েছে, " তাদের সকল

আমলগুলা হবে খুবই নিখুত ও সুন্দর । তাদের

নামাজের তুলনায় তোমাদের নামাজকে তুচ্ছ

মনে করবে,তাদের রোজা দেখে তোমরা

তোমাদের রোজাকে তুচ্ছ ও নগন্য মনে করবে।

তাদের আমল দেখে তোমাদের আমলকে হেয়

মনে করবে।

. সাধারন পাবলিক তখন ভাবে,

আহা ! কতই না উত্তম ভাবে নামাজ পড়তেছে

আর এ কথায় হাদীস শরীফে বলা হয়েছে-"

তাদের সকল আমলগুলা হবে খুবই নিখুত ও সুন্দর

পঞ্চমত বলা হয়েছে--" তারা কুরআনের উপর

আমল বা কুরআন প্রতিষ্ঠার কোন চেষ্টাও

করবে না।'"

→ এর প্রমানও এদের মধ্যে বিদ্যমান । এরা

কুরআন শরীফের কোন হুকুম প্রতিষ্ঠার কোন

চেষ্টাই করে না। অথচ অসংখ্য বেনামাজি

আছে, সুদ খোর আছে, দূর্নিতিবাজ আছে

এদের বুঝাইতে যায় না।

শুধু তাই নয়, দুনিয়াতে খিলাফত কায়েম হোক

এ ব্যাপারে তাদের কোন প্রচেষ্টা নেই।

বরং খিলফতের ব্যাপারে মানুষকে

নিরুৎসাহিত করে।

যেমন তাদের কিতাবে বর্নিত আছে--

" প্রচলিত ছয় উছুলই

হচ্ছে জিহাদে আকবর!"

দলীল-

√ তাবলীগে দাওয়াত কি এবং কেন ৭৫ পৃষ্ঠা

√ তাবলীগ গোটা উম্মতের গুরু দায়িত্ব ১০৯

পৃষ্ঠা ।

√ তাবলীগ জামায়াতের সমালোচনা ও তার

জবাব ৮৮ পৃষ্ঠা ।

মসজিদে মসজিদে থাকাকে

তারা জিহাদে আকবর বলে। এভাবে

ইসলাম কায়েমের দিক থেকে কৌশলে তারা

মানুষকে সরিয়ে দিচ্ছে।

আর তাছাড়া তাদের নেসাব ছাড়া তারা

কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফের কোন

আলোচনাই করে না।

সূতরাং হাদীস শরীফে বর্নিত- "

তারা কুরআনের উপর আমল বা কুরআন

প্রতিষ্ঠার কোন চেষ্টাও করবে না।" এই

লক্ষনও তদের মাঝে

বিদ্যমান সেটা প্রমান হলো।

পরিশেষে হাদীস শরীফে বলা হয়েছে-"

এদের আমল তোমাদের যতই আকৃষ্ট করুক না

কেন,কখনোই এদের দলে যাবে না।

তীর যেমন ধনুক

হতে বের হয়ে যায়,সে আর কখনো ধনুকের

নিকট ফিরে আসে না।

তেমনি এরা কুরআন সুন্নাহর পথে

ফিরে আসবে না।

(ক)তাদের কিতাবের দলীল-

√ মলফুযাতে শায়খুল হাদীস ২৩১ পৃষ্ঠা ।

তাবলীগের অন্যতম গুরু ইসমাঈল হোসেন

দেওবন্দী লিখেছে--

" দাওয়াত বন্ধ করার কারনে আল্লাহ হযরত

ইউনুছ আলাইহিস সালামকে অবশ্য গযবে

ফেললেন। হযরত ইউনুছ আলাইহিস সালাম

মাছের পেটে চল্লিশ দিন আবদ্ধ থেকে নিজ

ভুল ত্রুটি স্বীকার করে তওবা করার কারনে

বিপদ থেকে উদ্ধার পেলেন।"

নাউযুবিল্লাহ !!

দলীল-

√ তাবলীগ গোটা উম্মতের গুরু দায়িত্ব ৬২ ও

৮৯ পৃষ

" হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম চল্লিশ দিন পর্যন্ত গারে হেরা

পর্বতে থেকে আল্লাহ পাকের ধ্যান ও

যিকিরের চিল্লা দিলেন, যার ফলে তিনি

কুরআন ও নবুওয়াত প্রাপ্ত হলেন।"

নাউযুবিল্লাহ !!

দলীল-

√ তাবলীগ গোটা উম্মতের গুরু দায়িত্ব ৮৯

পৃষ্ঠা ।

উক্ত ইসমাঈল হোসেন দেওবন্দী

তার কিতাবে আরো লিখেছে--

" হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম দীর্ঘকাল পর্যন্ত ঈমানের তাবলীগ

করে প্রথমে ঈমান পরিপোক্ত করিয়াছেন।"

দলীল-

√ তবলীগ গোটা উম্মতের গুরু দায়িত্ব ৭০ পৃষ্ঠা

ইসমাইল হোসেন দেওবন্দী লিখেছে--

"লক্ষাধিক ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু

আনহুমগনের মধ্যে অধিকাংশই মূর্খ ছিলেন।"

নাউযুবিল্লাহ !!

দলীল-

√ তাবলীগ গোটা উম্মতের গুরু দায়িত্ব ৯৩

পৃষ্ঠা ।

√ শরীয়তের দৃষ্টিতে তাবলীগী নেছাব ।

√ তাবলীগ জামায়াতের প্রধান তর্ক ও ইচ্ছা।

প্রচলিত তাবলীগিদের বিশ্ব আমীরের বয়ান

সম্বিলিত কিতাবে লিখেছে--

" কিছু ছাহাবী উহুদ যুদ্ধে ভুলের স্বীকার হয়ে

চীজ আসবাব (গনীমতের মাল) এর দিকে দৃষ্টি

দিয়ে গিরিপথ থেকে সরে এসে রসূলে পাক

ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর

নির্দেশ অমান্য করায় উহুদ যুদ্ধে পরাজয় বরন

করতে হয়েছে ।"

দলীল-

√ হযরতজীর কয়েকটি স্মরনীয় বয়ান ৫৩-৫৫

ইসমাইল হোসেন দেওবন্দী

লিখেছে-

" হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু

আনহুমগনের ঈমান দীর্ঘকাল তাবলিগ করার

কারনেই পরিপোক্ত বা মজবুত হয়েছে ।"

দলীল-

√ তাবলীগ গোটা উম্মতের গুরু দায়িত্ব ৭০

পৃষ্ঠা

এরপর তৃতীয়ত যেটা বলা হয়েছে, এরা

সুন্নতী বাবরী চুল না রেখে সর্বদা মাথা

ন্যাড়া বা মুন্ডন করবে। এটা খুবই মজার

ব্যাপার এটা যাচাই করতে আপনারা ঢাকা

কাকরাইল আসেন, দেখবেন ন্যাড়া মাথার

অনেকে ঘোড়াফেরা করতেছে। এবং

আমি নিজেও অসংখ্য বার তাবলিগী দের

সেলুনে মাথা মুন্ডন করতে দেখেছি।

বাংলাদেশের তাবলিগীদের

অন্যতম মৃত শায়খুল হাদীস আজিজুল হক এর

"রহমানী পয়গাম" এবং হাটহাজারীর আহম্মদ

শফীর "মাসিক মঈনুল ইসলাম" পত্রিকায়

যতবার চুল রাখা সংক্রান্ত প্রশ্ন করা হয়েছে

ততবার এরা উত্তর লিখেছে, মাথা মুন্ডন

করা সুন্নত!"

দলীল-

√ মঈনুল ইসলাম মার্চ/২০০২ সংখ্যা।

অথচ সিয়া ছিত্তার হাদীসে শতশত হাদীস

শরীফ আছে, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি

ওয়া সাল্লাম বাবরী চুল রাখতেন।

কিতাবে বর্নিত আছে--

ﺍﻥ ﺍﻟﻤﺼﻄﻔﻲ ﻛﺎﻥ ﻻﻳﺤﻠﻖ ﺷﻌﺮﻩ ﻟﻐﻴﺮ ﻧﺴﻚ

অর্থ: প্রিয় নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম হজ্ব ব্যাতীত অন্য কোন সময় উনার

মাথা মুন্ডন করেন নাই।"

দলীল-

√ জামিউল ওয়াসিল ফি শরহে শামায়িল ১/৯৯

ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া ৯ম খন্ড ৯৩ পৃষ্ঠায়

আছে-" মাথা মুন্ডন সুন্নত নয়।"

অথচ এই তাবলিগীরা মাথা মুন্ডন করে

চকচকে করে রাখে।

স্বয়ং হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম তিনি বর্ননা

করে বলেন--

ﺳﻴﻤﺎ ﻫﻢ ﺍﻟﺘﺤﻠﻴﻖ

অর্থ: মাথা মুন্ডন হচ্ছে এদের বিশেষ চিহ্ন ।"

দলীল-

√ মিশকাত শরীফ কিতাবুল কিসাস

সূতরাংএদের অন্যতম লক্ষন বা

বৈশিষ্ট্য মাথা মুন্ডন বা ন্যাড়া করা । অতএব এ

তৃতীয় বৈশিষ্ট্যও প্রমানিত হলো।

(৪) চতুর্থত যে বৈশিষ্ট্য, অধিকাংশ লোক

নির্বোধ, মূর্খ, জাহিল হওয়া। এবিষয়ে এই

নোটের প্রথম হাদীস শরীফের বিশ্লেষণে

দলীল দেয়া হয়েছে । ওইখানে দেখুন....

(৫) পঞ্চমত যেটা বলা হয়েছে, এদের বক্তব্য

হবে বহুগুনের ফযীলতে বা চমকপ্রদ। এ

বিষয়েও এই নোটে প্রথম হাদীস শরীফের

বিশ্লেষণে দলীল দিয়ে প্রমান করা হয়েছে ।

সেখানে আবার দেখুন.......

(৬) ষষ্ঠত যেটা বলা হয়েছে, এরা নিজেদের

ব্যতীত অন্য সবাইকে কাফির মনে করবে। চিল্লাওয়ালা তাবলীগিরা

নিজেদের ব্যতীত সবাইকে অমুসলিম মনে

করে। এদের ধরনা শুধু এরাই মুসলিম আর সবাই

কাফির।

এর প্রমান স্বয়ং তাবলিগীদের প্রতিষ্ঠাতা

ইলিয়াস মেওয়াতির মালফুজাতে আছে। সে

লিখেছে-

" মুসলমান দুই প্রকার। একদল তাবলীগের জন্য

হিজরত করবে । দ্বিতীয় দল নুছরত বা সাহায্য

করবে। এ দু'দলই মুসলমান ।"

দলীল-

√ মালফুজাত ৪৩ পৃষ্ঠা ৪২ নং মালফুজ।

√ দাওয়াত ও তাবলীগ কি ও কেন ২১ পৃষ্ঠা ।

√ হযরতজীর কয়েকটি সম্মরনীয় বয়ান ২/১১

√ তাবলীগ গোটা উম্মতের গুরু দায়িত্ব ১৭৪

পৃষ্ঠা ।

উক্ত তাবলীগ প্রতিষ্ঠাতা স্পষ্ট বলেই

দিলো, যারা তার স্বপ্নে পাওয়া তাবলীগি

করবে এবং একাজে সাহায্য করবে তারাই

মুসলমান। আর যারা করবে না তারা মুসলমান

না।

শুধু তাই নয়, তাবলীগ গুরু আম্বর আলী লিখেছে-

" ছয় উছুল ভিত্তিক এবং তরতীব মোতাবেক

সকল স্থানের সকল লোককে দাওয়াত দেয়া

ফরজ বা জরুরী এবং এ দাওয়াত না দেওয়ার

কারনে যারা ঈমানহারা হয়ে মারা যাবে,

তাদের জন্য যারা দাওয়াতের কাজ করবে না

অথবা জড়িত থাকবে না, তাদেরকে আল্লাহ

পাকের কাছে জবাবদীহি করতে হবে এবং

তারা পাকড়াও হবে।"

দলীল-

√ দাওয়াতে তাবলীগ ৪৯ পৃষ্ঠা ।

উক্ত দলীল থেকে দেখা যাচ্ছে, তাদের

ভাষ্যমতে যারা তাদের স্বপ্নে প্রাপ্ত

চিল্লাওয়ালা ছয় উছুলী তাবলীগ করবে না

তারা ঈমানহারা হবে, জাহান্নামী হবে ,

মুসলমান হতে পারবেনা ইত্যাদি।

সংগ্রহীত এবং প্রস্তুত কারি

মোঃ রুহুল আমিন



বিষয়: বিবিধ

২৬৩৪ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

381201
০৮ জানুয়ারি ২০১৭ সন্ধ্যা ০৭:১১
মনসুর আহামেদ লিখেছেন :
ভালো লাগলো / অনেক ধন্যবাদ
381205
০৮ জানুয়ারি ২০১৭ রাত ১০:১৪
কুয়েত থেকে লিখেছেন : লেখাটি খুবই ভালো লাগলো মহান আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক দীনের উপর কায়েম থাকার তাওফিক দান করুন।আপনাকে ধন্যবাদ
381206
০৮ জানুয়ারি ২০১৭ রাত ১১:৩২
ইসলাম কখনো মাথা নত করেনা লিখেছেন : প্রসংশা করে উৎসাহি করার জন্য ধন্যবাদ
381267
১২ জানুয়ারি ২০১৭ দুপুর ০২:২১
অয়ন০৩১ লিখেছেন : হাদীসটি সহীহ। কিন্তু এটি রসুল (স.) বলেছিলেন খারেজীদের সম্পর্কে। নীচের লেখাটি বিস্তারিত পড়ুন।
ইসলামের প্রথম বাতিল দল খারেজী।রাসুল (সঃ) এর ওফাতের পর হযরত আলি (রাঃ) এর খিলফাতকালে এই দলটির উথান হয়।এই দলটি সম্পর্কে আল্লাহ তার রাসুল (সঃ) কে আগে ভাগেই জানিয়েছিলন,এবং রাসুল (সঃ) সাহাবীদের নিকট এই দলটি সম্পর্কে বিস্তারিত ভবিষ্যত বাণী করে যান যাতে উম্মাতে মুহাম্মাদি (সঃ) সচেতন হতে পারে।কয়েক দশক পরেই রাসুল (সঃ) এর ভবিষ্যৎ বাণী সত্য প্রমাণিত হয় এবং খারেজিদের আত্বপ্রকাশ ঘটে।এরপর যুগ যুগ ধরে এই খারেজীরা মুসলিমদের মধ্যে ফিতনা ফাসাদ করেই যাচ্ছে।হযরত আলি (রাঃ) এর জামানা থেকে আজও পৃথিবিতে খাওরাজ বিদ্যমান।খারেজিদের হাতেই খোলাফায়ে রাশেদা শহীদ হয়।খারেজিদের হাতেই ১৪০০ বছর ধরে চলমান খিলাফার পতন হয়,খারেজীদের কারনেই বর্তমানে খিলফার যে সূর্য পুনরায় জেগে উঠেছিল তা অস্তমিত হওয়ার পথে।



খারেজি নামকরণঃ খারেজী আরবি শব্দ যা এসেছে খারাজা থেকে,যার অর্থ বেরিয়ে পড়া মূলত যারা কোরআন ও হাদিসের পথ থেকে বেরিয়ে পড়ে তাদেরকে খারেজী বলা হয়।এজন্যও খারেজী বলা হয় করন তারা বেরিয়ে পড়েছে হত্যার উদ্দেশে সমকালীন সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ মানুষকে।এছাড়াও যারা ( লোক বা গুষ্টি বা দল ) ইসলামের পক্ষে কাজ করে বা করার জন্য চেষ্টা করে ,কিংবা ইসলামকে পূর্ণ বা আংশিক ভাবে মেনে চলে তাদেরকে যারা কাফের মনে করে তাদের তাদের কে খারেজী বলা হয়।





খারেজীর আত্মপ্রকাশঃ



জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ হতে বর্ণীত ,এক লোক রাসুল মুহাম্মদ (সঃ) এর কাছে জেরানা নামক স্থানে দেখা করেন। জেরানা নামক স্থানটি হল সেই জায়গা যেখানে রাসুল মুহাম্মদ (সঃ) হুনায়নের যুদ্ধে প্রাপ্ত গনিমতের মাল বণ্টন করছিলেন ।সাহাবী বেলাল (রঃ) এর কাপড়ের উপর রুপার টুকরা গুলো রাখা ছিল। নবীজি সেইখান থেকে মুষ্টি বদ্ধ ভাবে মানুষকে দান করছিলেন। তখন উপস্থিত ঐ লোক বললঃ- “হে মুহাম্মদ আপনি আল্লাহ্কে ভয় করুন ও ইনসাফ করুন”



রাসুল মুহাম্মদ (সঃ) বলেনঃ ধ্বংস তোমার জন্য ।আমি যদি ইনসাফ না করি তবে কে ইনসাফ করবে? আল্লাহর শপথ! তোমরা আমার পর এমন কোন ব্যক্তি পাবে না যে আমার চেয়ে অধিক ন্যায় পরায়ণ হবে।সাথে সাথে ওমর (রঃ) (মতান্তরে খালিদ বিন ওয়ালিদ ) বলেন হে রাসুল আপনি অনুমতি দিন আমি এই মুনাফিককে হত্যা করি। রাসুল মুহাম্মদ (সঃ) বলেনঃ না, আমি আল্লাহ্র কাছে আশ্রয় চাই । যদি এমন কর তবে মানুষ বলবে আমি আমার সাহাবীদের হত্যা করি ।ঐ লোক চলে যাওয়ার পর ,তিনি আরও বলেন, এই লোকটা ও তার কিছু সঙ্গী থাকবে যারা কোরআন পড়বে কিন্তু কোরআন তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা ইসলাম থেকে এমন ভাবে বের হয়ে যাবে, যেমন তীর ধনুক থেকে বের হয়ে যায়।[মুসলিম শরীফ][নাসায়ী শরীফ পৃষ্ঠা ৩০৮]



এই লোকের বংশধর ও অনুসারীরাই হচ্ছে খারেজি।এরা কেমন হবে কি করবে রাসুল (সাঃ) এ সম্পর্কে বিস্তারিত বলে যান।



মুসলিম উম্মাহকে সতর্ক করে রাসুল মুহাম্মদ (সঃ) বলেন,অদূর ভবিষ্যতে আমার উম্মতের মধ্যে মতানৈক্য ও ফিরকা সৃষ্টি হবে।এমন এক সম্প্রদায় বের হবে যারা সুন্দর ও ভাল কথা বলবে।আর কাজ করবে মন্দ।তারা কোরআন পাঠ করবে-তা তাদের কন্ঠনালী অতিক্রম করবে না।তারা দ্বীন অর্থাত্ ইসলাম থেকে এমনিভাবে বেরিয়ে যাবে,যেভাবে তীর শিকারী থেকে বেরিয়ে যায়।তারা সৃষ্টির সবচেয়ে নিকৃষ্ট।ঐ ব্যক্তির জন্য সুসংবাদ যে তাদের সাথে যুদ্ধ করবে এবং যুদ্ধে তাদের দ্বারা শাহাদাত বরণ করবে।তারা মানুষকে আল্লাহর কিতাব(কোরআন)-এর প্রতি দাওয়াত দেবে,অথচ তারা আমার কোন আর্দশের উপর প্রতিষ্ঠিত নয়।যে ব্যক্তি তাদের বিরুদ্ধে লড়বে সে অপরাপর উম্মতের তুলনায় আল্লাহ তায়ালার অনেক নিকটতম হবে।সাহাবায়ে কেরাম বললেন,হে আল্লাহর রাসুল (দঃ)! তাদের চিহ্ন কি? হুজুর করীম (দঃ) উত্তরে বললেন,অধিক মাথা মুন্ডানো।(আবু দাউদ শরীফ,পৃষ্ঠা ৬৫৫,মিশকাত শরীফ,পৃষ্ঠা ৩০৮)



মুহাম্মদ (সঃ) আরো বলেন, ‘শেষ যামানায় একদল তরুণ বয়সী নির্বোধ লোকের আবির্ভাব ঘটবে, যারা সর্বোত্তম কথা বলবে। তারা ইসলাম থেকে এত দ্রুত গতিতে বের হয়ে যাবে, যেমন তীর ধনুক থেকে বের হয়ে যায়। তাদের ঈমান তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তোমরা তাদেরকে যেখানেই পাবে সেখানেই হত্যা করবে। কারণ যে তাদেরকে হত্যা করবে তার জন্য ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট নেকী রয়েছে’।

[বুখারী হা/৩৬১১, ৫০৫৭, ৬৯৩০; মুসলিম হা/২৫১১; আবূদাঊদ হা/৪৭৬৭; নাসাঈ হা/৪১০২; মিশকাত হা/৩৫৩৫]



অন্য বর্ণনায় আছে, রাসুল মুহাম্মদ (সঃ) বলেন, ‘তোমরা তাদের সালাতের তুলনায় তোমাদের সালাতকে তুচ্ছ মনে করবে, তাদের সিয়ামের তুলনায় তোমাদের সিয়ামকে এবং তাদের আমলের তুলনায় তোমাদের আমলকে তুচ্ছ জ্ঞান করবে...। তারা মুসলমানদেরকে হত্যা করবে এবং মূর্তিপূজকদের ছেড়ে দিবে...’। [বুখারী হা/৫০৫৮; মুসলিম হা/২৪৫৩ ও ২৪৪৮; মিশকাত হা/৫৮৯৪]





মূসা ইবনে ইসমাইল(র)...........ইউসায়ের ইবনে আমর(রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সাহল ইবনে হুনায়েফ (রা) কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি নবী(সা)কে খারিজীদের সম্পর্কে কিছু বলতে শুনেছেন কি? তিনি বললেন, আমি তাঁকে বলতে শুনেছি। আর তখন তিনি (রাসূলুল্লাহ সা.) তাঁর হাত ইরাকের দিকে বাড়িয়েছিলেন যে, সেখান থেকে এমন একটি কাওম বের হবে যারা কুরআন পড়বে সত্য, কিন্তু তা তাদের গলদেশ অতিক্রম করবেনা। তারা ইসলাম থেকে বেরিয়ে য়াবে যেমন তীর শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায়।

(সহিহ বুখারী, খন্ড ৮, অধ্যায় ৮৪, হাদিস ৬৮)



মুসনাদে আহমাদের অন্য বর্ণনায় এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাঃ বর্ণনা করেছেন যে, পূর্ব দিক থেকে আমার উম্মতের মধ্যে এমন একদল লোকের আবির্ভাব ঘটবে যারা কোরান তেলাওয়াত করবে কিন্তু কোরানের বানি তাদের কণ্ঠনালি অতিক্রম করবে না। যত বারই তাদের কিছু অংশের প্রাদুর্ভাব দেখা যাবে ততবারই তারা ধ্বংস (হত্যা করা) হয়ে যাবে। এভাবে রাসুল সাঃ দশ বার বলার পরে বলেন, 'যত বারই তাদের কিছু অংশের আবির্ভাব হবে ততবারই তারা ধ্বংস (হত্যা করা) হয়ে যাবে এবং যতক্ষণ পর্যন্ত না তাদেরই একটি গোষ্ঠীর মধ্যে দাজ্জালের আবির্ভাব হয়।
খারেজী সম্প্রদায় উত্থানের সূচনা:
রাসুল (সাঃ) এর অফাতের পর রাসুল (সঃ) এর সকল ভবিষ্যত বানী সত্য প্রমানিত হয় এবং শেষ পর্যন্ত খারেজীদের আত্ব প্রকাশ ঘটে।হিজরি ৩৭ সালে একটি কাহিনী খারেজীদের সম্পর্কে সকল ধারণা স্পষ্ট হয়।
হযরত আলী (রঃ) শাসনের সময় ইসলামের খলিফার নির্ধারণের মুসলমানরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে ।একটি দল হল হযরত আলী (রঃ) এবং অন্য দল হল মুয়াবিয়া (রাঃ)। ক্রমে অবস্থা রক্তক্ষয়ীতে রুপ লাভ করে (৬৫৭ সালের জুলাই মাসে আলীর সাথে মুয়াবিয়ার ‘সিফফিন’ নামক স্থানে যুদ্ধ হয়) , তখন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বন্ধের জন্য হযরত আলী (রঃ) দুই জন বিচারক নিয়োগ দিলেন ,একজন হযরত আলী (রঃ) পক্ষ থেকে অন্য জন মুয়াবিয়ার (রাঃ) পক্ষ থেকে।সিফফীন যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর শাম ও ইরাকের সকল সাহাবীদের ঐক্যমত্যে বিচারব্যবস্থা পৃথকীকরণ এবং আলী (রা এর কূফায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
তখনই খারেজী সম্প্রদায় আলী (রা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে হারূরা প্রান্তরে এসে বসতি স্থাপন করে। সেনাবাহিনীতে তাদের সংখ্যা আট হাজার ছিল।বিচ্ছিন্নতার সংবাদ পেয়ে হযরত আলী (রা ইবনে আব্বাস (রা -কে তাদের কাছে পাঠান। ইবনে আব্বাস (রা বুঝিয়ে শুনিয়ে তাদের থেকে দুই হাজারকে আলী (রা এর অনুসরণে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন। অতঃপর আলী (রা কুফার মসজিদে দাড়িয়ে দীর্ঘ ভাষণ দিলে মসজিদের এক কোনায়- “লা হুকমা ইল্লা লিল্লাহ” (আল্লাহ্র বিধান ছাড়া কারো বিধান মানি না, মানব না) স্লোগানে তারা মসজিদ ভারী করে তুলে। আলী (রা এর দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়- “আপনি বিচারব্যবস্থা মানুষের হাতে তুলে দিয়েছেন?! আল্লাহ্র বিধানে অবজ্ঞা প্রদর্শনের দরুন আপনি মুশরেক হয়ে গেছেন…!!”



খারেজীদের বক্তব্য , “হযরত আলী (রঃ) বিচারের দায়িত্ব মানুষের উপর নেস্ত করেছেন, কিন্তু বিচারের মালিক আল্লাহ্।আল্লাহ্ ছাড়া কারোও ফয়সালা মানা যাবে না ।“সিদ্ধান্ত তো আল্লাহ্ ছাড়া কারোর নয়” (إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ ৬:৫৭)।

এই আয়াতের হুকুম ভংগ করেছেন। তাই বিচারক নিয়োগ কুরআন পরিপন্থী । সুতরাং আপনি কুফরি করেছেন এবং আপনি কাফের হয়ে গেছেন ,আপনাকে তওবা করে পুনরাই ইসলাম গ্রহন করতে হবে। ”।অথচ সত্য হল মানুষের মধ্যে ফয়সালার জন্য মানুষকেই বিচারক হতে হবে।আর ফয়সালা হবে আল্লাহ্র আইন অনুসারে ।এই খারিজীরা নিজেদের নির্বুদ্ধিতা ধর্মীয় গোঁড়ামিতে রূপদান করে এবং মুসলমানদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের সূচনা করে।
তখন আলী (রা.) বললেন- তোমাদের ব্যাপারে আমরা তিনটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি:

১. মসজিদে আসতে তোমাদের আমরা বারণ করব না।

২. রাষ্ট্রীয় সম্পদ থেকে তোমাদের বঞ্চিত করব না।

৩. আগে-ভাগে কিছু না করলে আমরা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব না।



কিছুদিন পর সাধারণ মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষ করত: তারা আব্দুল্লাহ্ বিন খাব্বাব বিন আরিত (রা.)-কে হত্যা করে তার স্ত্রীর পেট ফেড়ে দু-টুকরা করে দেয়।আলী (রা.) জিজ্ঞাস করেন, আব্দুল্লাহ্কে কে হত্যা করেছে? জবাবে তারা- আমরা সবাই মিলে হত্যা করেছি- স্লোগান দিতে থাকে। এরপর আলী (রা.) তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেন। নাহরওয়ান অঞ্চলে তাদের সাথে মুসলমানদের তুমুল যুদ্ধ হয়। যুদ্ধ সমাপ্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে খারেজীরা পরাজিত হয় খারেজি সম্প্রদায়ের ফেতনাও সাময়িক ভাবে খতম হয়ে যায়।
পরজিত খারেজিদের বংশধর ও অনুসারীরা এরপরেও বিভিন্য সময় আত্বপ্রকাশ করে এবং ফিতনা ফাসাদ বাধাতে উদ্যত হয়।
খারেজিদের কিছু বৈশিষ্ট্যঃ
খারেজিদের উতপত্তি হবে পূর্ব দিক থেকে (রিয়াদ ইরাক ও তৎসংলগ্ন অঞ্চল)
তারা বয়সে হবে নবীন ও তরুণ যারা নিজেদের অনেক জ্ঞ্যানী ভাববে।
খারেজিরা মুসলমানদেরকে যেকোনো গুনাহের (বিশেষ করে গুনাহে কবিরা ) জন্য কাফের বলে সম্বোধন করে।এবং সামান্য ব্যাপারে কুফরের ফতোয়া দেয়।
তারা মুসলমানদের হত্যা করবে শুধু মাত্র ধর্মীয় মতের অমিলের (কিভাবে ইবাদত / শাসন করা হবে এই বিষয়ে ) কারনে। কিন্তু তারা কাফের , মুশরিক , কবর ও মূর্তি পূজারী দের ছেড়ে দিবে
তারা মুসলিমদের প্রতি হবে কঠোর কাফেরদের প্রতি হবে নমনীয়।
তারা কথায় কথায় মুসিলমদের তাকফীর করবে।(বিদাতি কাফের বলে সম্বোধন করবে)।
তারা হবে ইবাদতে অন্যদের চেয়ে অগ্রগামী কিন্তু নিজদের ইবাদতের জন্য হবে অহংকারী।
তারা কুরান পড়বে কিন্তু কুরান বুঝবেনা বরং উল্টোটা বুঝবে।
তারা সর্বোত্তম কথা বলবে কিন্তু সর্ব নিকৃষ্ট কাজ করবে।
কুরানের যেসব আয়াত কাফের জন্য প্রজজ্য তা তারা অজ্ঞ মুসলিমদের উপর প্রয়োগ করবে।
পৃথিবীতে সব সময়ই খারেজি আকিদার লোক থাকবে এবং সর্বশেষ এদের মধ্য থকেই দাজ্জালের আবির্ভাব হবে
খারেজি চিনার উপায়ঃ

১. হযরত আলী(রাঃ):

অতীতের খারেজী সম্প্রদায়রা ইসলামের ৪র্থ খলিফা হযরত আলী(রাঃ) মুশরিক এমনকি কাফির বলতেও দ্বীধাবোধ করত না। খারেজী সম্প্রদায়ের সাথে উনার বিশাল যুদ্ধে উনি এদের পরাজিত করেন। তাই খারেজি সম্প্রদায়রা উনার প্রশংসামূলক যে সব সহীহ হাদীস আছে সেগুলোকে জাল-যয়ীফ হিসেবে প্রচারণা চালায় এবং যারা উনার প্রশংসা করে তাদেরকে শিয়া-সূফী মনে করে। অতীতের খারেজী সম্প্রদায়রা উনার বিরোধীতা করত directly আর এখনকার খারেজিরা করে indirectly।

২.ইমাম হাসান হোসেন (রাঃ)

রাসুল (সঃ) এর দৌহিত্র জান্নাতের পুরুষদের সর্দার ইমাম হাসান হোসেন খারেজিদের চোখের কাটা।অতীতের খারেজিরা ডাইরেক্টলি ইমাম হাসান হোসেনের বিষাদগার করত। বর্তমান খারেজীরা তাদের বিষাদগার করার সাহস পাই না বটে তবে তাদের প্রশংসাকারীদের কশিয়া বলে অভিহিত করে।
৩.খারেজীরা আমীরে মুয়াবিয়া (রাঃ) কে কাফের মনে করে কিন্তু তার ছেলে ইয়াজিদকে পাক্কা মুসলিম মনে করে।কারন মুয়াবিয়ার (রাঃ) এর সাথে খারেজিদের যুদ্ধ হয়েছিল,আবার ইয়াজিদ খারেজিদের জানের দুশমন ইমাম হাসান হোসেনকে হত্যা করেছিল।খেয়াল করলে দেখবেন খারেজিরা ইয়াজিদের নামের পাশে (রাঃ)! লাগায়।
৪.ইমাম আবু হানিফা(রঃ):

উনার সাথে খারেজী-মুতাজিলা সম্প্রদায়ের অনেক বাহাস হয়েছিল। সে সবের একটি বাহাসেও খারেজীরা উনার সাথে পেরে উঠে নি। তাই খারেজীরা উনাকে পছন্দ করত না ও উনার নামে বানোয়াট কথা ছড়াত। আজকের খারেজি সম্প্রদায়ের অনেকেই উনাকে পছন্দ করে না ও উনার নামে বানোয়াট কথা ছড়ায়।

৫.ইমাম আশ’আরী (রঃ) এবং ইমাম মাতরুদী(রঃ):
ইমাম আশ'আরী(রঃ) এর সম্পূর্ণ নাম ইমাম আবু আল-হাসান আল-আশ'আরি(রঃ) এবং পরবর্তিতে তিনি ইমাম আহমদ বিন হাম্বল(রঃ) এর পাশাপাশি ৩য় শতাব্দীর মুজাদ্দিদ হিসেবে স্বীকৃত পান সমস্ত আলেমগণের নিকট।ইমাম আশারী(রঃ) এক সময় খারেজী-মুতাজিলা ছিলেন। কিন্তু পরবর্তিতে তিনি এই সম্প্রদায়ের আক্বীদা যে কতটা ভ্রান্ত তা বুঝতে পেরে এদের সংস্পর্শ তো ত্যাগ করেনই সেই সাথে এদের বিরুদ্ধে বই লিখে এদের আক্বীদা সংক্রান্ত সমস্ত ভ্রান্ত মতবাদকে খন্ডন করে অসংখ্য বই রচণা করেন। ইমাম মাতরুদী(রঃ) ও ঠিক একই কাজ করেছিলেন। যার কারণেই খারেজী-মুতাজিলারা উনাকে একদমই পছন্দ করত না।

আজকের খারেজি সম্প্রদায়ের অনেকেই উনাকে পছন্দ করে না; উল্টা ইসলামী আক্বীদাগুলোকে নিজেদের সুবিধামত কখনও ‘আশ’আরী আক্বীদা’, আবার কখনওবা ‘মাতরুদী আক্বীদা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে সাধারণ মানুষদের মনে সন্দেহের সৃষ্টি করে চলেছে।বর্তমান জামানার খারেজিরা এই দুই মহান ঈমামের নাম শুনলেই চে চে করে উঠে।



বর্তমান জামানার খারেজীঃ
উপরে উল্লেখিত খারেজিদের ইতিহাস খারেজিদের বৈশিষ্টের সাথে বর্তমান ও কিছুকাল পূর্বে যাদের হুবহ মিল আছে তারাই হল এযুগের খারেজি।লক্ষনীয় বিষয় যে খারেজিদের সাথে কারো সাধারণ বিশিষ্ট মিলে গেলেই সে খারেজি নয়,তবে এই গুণ পরিহার্য।তবে একজন মুসলিমের জন্য খারেজি হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে কুফুরি/ব্দাত করার কারনে সে পাইকারি হারে মুসলিমদের কাফের/বিদাতি বলবে।এবং কাফেরদের রেখে মুসলিমদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হবে।শাষকের ভুলের কারনে শাষকেরর বিরুধ্যে যুদ্ধ না করে মুসলিম সম্রাজ্যের বিরুধ্যে যুদ্ধ করবে।
অনেকেই জানেন বর্তমান সৌদি রাজতন্ত্রে জন্ম হয়ছে খিলফাতের বিরুদ্ধ্যে যুদ্ধ করে,মুসলিম সম্রাজ্য ভেঙ্গে খান খান করে।যারা জানেন না তারাএই নোটের শেষে দেয়া সৌদি রাজতত্রের জন্ম ইতিহাস নিয়ে আমার আগের নোটটা পরে জেনে নিয়েন।বর্তমান জামানায় খারেজী দেখতে হলে সৌদি রাজন্ত্র ও এর সমর্থক গোষ্ঠী নামধারী আলেম উলামাদের দেখলেই যথেষ্ট।এরা কথায় কথায় মুসলিমদের কাফের বিদাতি ফতোয়া দেয়।এখানে উল্লেখ্য যে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা হচ্ছে অজ্ঞতা বশত বা জেনেশুনে কেউ কবিরা গুনাহ বা বিদাত করলেই কেউ কাফের বা বিদাতি নয়।তবে তার তওবা করা আবশ্যক।
এছাড়াও সৌদি রাজারা কাফেরদের প্রতি কি পরিমান নমনীয় ও মুসলিমদের প্রতি কি পরিমান কঠোর তা সকলেরি জানাশুনা,এগুলি বলার প্রয়োজন বোধ করছি না।
মুসলিমদের জানের দুশমান আমেরিকাহচ্ছে সৌদিদের প্রভু।এরা আল্লহর পরিবর্তে আমেরিকাকে প্রভু বানিয়ে বহু আগেই ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে গেছে।
ইরাক ও সিরিয়া সাম্প্রতিককালে খারেজিদের আবির্ভাব হয়েছে যারা isis নামে পরিচিত প্রথমদিকে আমিও এদের মুজিহিদ ভেবে ভুল অরেছিলাম।
আমি নিজেও এদের অনেক প্রচারণা করেছি।কিন্তু এদের আসল রুপ প্রকাশিত হয়ছে সাম্প্রতিককালে।এরা বাসার আল আসাদকে বাদ দিয়ে সিরিয়ার অন্য গ্রুপের মুজাহিদদের হত্যা করা শুরু করেছে যার সুস্পষ্ট প্রমান আছে।সারা বিশ্বের মুজাহিদদের প্রানপিয় তানজিম আল কায়েদা ইতিমধ্যে এদের গোমরা প্রথভষ্ট খারেজি ঘোষণা করেছে।এরা আহলুল আকদের সমর্থন না নিয়ে খিলফা ডিক্লেয়ার করেছে এবং তাদের অবৈধ খিলফা যারা মানতে অস্বীকার করছে তাদের ব্রাশ ফায়ার করছে ইরাক ও সিরিয়াতে।আপনারা জানেন পাশেই ইজরায়েল ফিলিস্তিনি মুসলিম হত্যা,আসাদ সিরিয়াতে সুন্নি হত্যা করছে।সেদিকে তাদের ভ্রুক্ষেপ নেই তারা নেমেছে মুসলিম হত্যা করে বায়াহ আদায় করতে ।

এবার লেখকের কাছে প্রশ্ন:
১. তাবলীগ জামাত কতজনকে খুন করেছে?
২.কতজনকে কাফের বিদআত বলেছে?
৩. মূর্খ বা অশিক্ষিত বা স্বল্প শিক্ষিত কারা? দ্বীনের ব্যাপারে নাকি দুনিয়ার ব্যাপারে? আপনি কি রাসুল(স.) কে অশিক্ষিত বলবেন (নাউজুবিল্লাহ)?






381283
১৩ জানুয়ারি ২০১৭ রাত ১০:০৪
স্বপ্নিল ও আকাশ নীলা লিখেছেন : লেখক আপনার লেখা শুধু মাত্র বই নির্ভর এবং উল্লেখিত পৃষ্ঠা বা বইয়ের সামগ্রিক চিত্র কে তুলে ধরে না। আশা করি আপনি একজন বিজ্ঞ আলেম এর সাথে আলোচনা করে বুঝুন।
অক্ষর জ্ঞান থাকলেই বা ডিগ্রী থাকলেই মানুষ শিক্ষিত হয় না।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File